বাংলাদেশের প্রায় সবকটি ইসলামী দল পরিচালিত হয় মসজিদ- মাদরাসা, দরবার আর খানকা কেন্দ্রিক; আপনি বাস্তবতা স্বীকার করেন আর না করেন- এক্ষেত্রে শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামী ই একমাত্র ব্যতিক্রম। নির্দিষ্ট কোন প্রাতিষ্ঠানিক গন্ডি বা বিশেষ কোন এলাকা নির্ভর রাজনৈতিক তৎপরতা থেকে মুক্ত এই দলটি। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত একটি চিত্র তুলে ধরছি:- রাজধানী ঢাকায় শত-শত কওমি মাদরাসা রয়েছে, সারাদেশ থেকে নানা মত-পথের মানুষের সন্তানরা ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসায় পড়তে যায়। কিন্তু এসব মাদরাসাগুলোতে কোন না কোন রাজনৈতিক বলয় প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণে নবাগত ছাত্রটিকেও বাধ্যতামূলক ওই দলের কর্মী হতে হয়। কোনো ইস্যুতে সভা সমাবেশ, মিছিলের প্রয়োজন হলে তাকে রাস্তায় নামতে হয়। ওই দলটির মূলশক্তি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। আমাদের দেশের কওমিপন্থিদের বৃহত্তর একটি অংশ স্বাভাবিকভাবেই পরিবেশের কারণে সংকীর্ণ মনা একগুঁয়ে টাইপের হয়। সবাই যে এই রকম তা নয় আবার। তারা কেউ বুঝে বা কেউ না বুঝে বাধ্যতামূলকভাবে দলীয় কর্মী হয়ে মাদরাসার মুহতামিম বা কতৃপক্ষের মর্জি অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মীতে পরিণত হয়। নিজেদের মাদরাসা বা খান্দানের বাইরে জনসাধারণের মধ্যে এসব ইসলামি দলগুলোর তেমন কোন প্রভাব নেই। যেমন: ঢাকার লালবাগ মাদরাসাটি মরহুম মাওলানা মুফতি ফজলুল হক আমিনীর রাজনৈতিক বলয়ে থাকায় এ মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরাই হচ্ছে ইসলামী ঐক্যজোটের জনশক্তি। বর্তমানে দলটি তিন খন্ডে খন্ডিত। কামরঙ্গিরচর মাদরাসাটি মরহুম মাওলানা হাফেজ্জী হুজুরের বলয়ে থাকায় এটা খেলাফত আন্দোলনের ঘাঁটি। দলটি বর্তমানে দুই খন্ডে খন্ডিত। বারিধারা মাদরাসা মরহুম মাওলানা নুর হোসেন কাসেমীর অনুসারী জমিয়ত নেতাদের নিয়ন্ত্রণাধীন। এনিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের প্রায় সবাই জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জনশক্তি। এই দলটিও চার খন্ডে খন্ডিত। এছাড়াও জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ নামে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদের নেতৃত্বে একটি, ও সিলেটের মাওলানা আলিমুদ্দিন দুর্লভপুরীর নেতৃত্ব জমিয়তে ওলামা নামক আরেকটি খন্ডিত দল রয়েছে। ঢাকার মুহাম্মদপুরে অবস্থিত জামিয়া রহমানীয়া মাদরাসা খেলাফত মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এবং এই মাদরাসা তার ছেলেদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় এখানকার ছাত্র শিক্ষকরা খেলাফত মজলিসের জনশক্তি। এই দলটিও বর্তমানে তিনভাগে বিভক্ত। দেশের সর্ববৃহৎ কওমি মাদরাসা চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা হেফাজতে ইসলামের জন্মস্থান হওয়ায় এই অঞ্চল কেন্দ্রিক প্রায় সব কওমি ছাত্র- শিক্ষকরা হেফাজতের কর্মী। হেফাজতও এখন প্রকাশ্যে দুই ধারায় বিভক্ত। চট্টগ্রামের লালখান বাজার মাদরাসা ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক মহাসচিব ও চারদলীয়জোট আমলের শীর্ষনেতা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীও তার ছেলে মুফতি হারুন ইজহারের নেতৃত্বাধীন হওয়ায় মাদরাসাটি তাদের বর্তমান দল নেজামে ইসলাম পার্টির ঘাঁটি। এই মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরাই এই দলের জনশক্তি। বর্তমানে দলটি দুইভাগে বিভক্ত। আবার অনেক পীর আছেন যাদের রাজনৈতিক দল রয়েছে। যেমন চরমোনাই পীরের দল হচ্ছে;- বাংলাদেশের ইসলামিক অঙ্গনের কমিউনিস্ট পার্টি খ্যাত কওমি ঘরানার সবচেয়ে বড় দল, কিন্তু খুবই সংকীর্ণমনা একগুঁয়ে দল, যার নাম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। যারা নিজেদের প্রধান্যের বাইরে আর কাউকে মানতে কখনোই রাজি নয়। এবার আসুন সুন্নীদের বেলায়- আটরশির পীরের দল হচ্ছে জাকের পার্টি, ফুলতলী পীরের দল হচ্ছে আনজুমানে আল ইসলাহ। যাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুরিদ থাকলেও রাজনৈতিক মাঠের প্রভাব নেই বললেই চলে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারের এক পীর নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির দল হচ্ছে তরিকত ফেডারেশন, এখানকার আরেক পীর সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারির দল হচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। তাদের ভোটের মাঠের অবস্থাও সেইম। সুন্নীদের নামকরা একটি দরবার ইমামে রব্বানী দরবারের পীর বাহাদুর শাহ ও মাওলানা জয়নুল আবেদীন জুবাইরের দল হচ্ছে ইসলামী ফ্রন্ট, তাদের আরেক মুরুব্বি মাওলানা এমএ মতিনের দল হচ্ছে ইসলামিক ফ্রন্ট। দলগুলোর অনুগত বড় বড় বক্তা বা আলেম রয়েছে প্রচুরসংখ্যক, কিন্তু ভোটের মাঠে এরা হিরো আলমের চেয়েও নার্ভাস। চট্টগ্রামের সুন্নীদের দেশসেরা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া কামিল মাদরাসাকে কেন্দ্র করে অন্তত তিন থেকে চারটা খন্ডিত দরবারি রাজনৈতিক দলের তৎপরতা রয়েছে। সেগুলোর শক্তি সামর্থ্য প্রাতিষ্ঠানিক দেয়ালের বাইরে একেবারেই অকেজো। যার প্রমান চট্টগ্রামের বহু নির্বাচনে বারবার দেখা গেছে। আবার অনেকে পীর সাহেব এমন আছেন যারা একই সাথে নিজেকে পীর এবং দলীয় প্রধান হিসেবে বিবেচনা মুরিদদেরও দলীয় কর্মী মনে করেন। কিন্তু নির্বাচনের সময় তাঁর মুরিদরাও তার দলকে ভোট দেয় না! কারণ পীর সাহেব মুরিদদের দলীয় কর্মী মনে করলেও মুরিদরা ভাবেন ভিন্ন কথা। জীবনে নানা অন্যায় অপকর্ম করার পর একজন পীর ধরে মুক্তির পথ খোঁজেন কেউ কেউ। কিন্তু ইসলামী বিপ্লব, খেলাফত বা শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোন গরজ ওই মুরিদরা উপলব্ধি করেননা। তারা মনে করেন, রাজনীতি মানে প্রচলিত রাজনীতি; যা ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতা। তাবলীগের কোটিকোটি ভক্ত, এই ভোটগুলো যদি ইসলামপন্থীদের নির্দিষ্ট কোন বাক্সে পড়ে, তাহলে দৃশ্যটা কেমন হবে কল্পনা করা যায়? কিন্তু এই তাবলীগ সংশ্লিষ্ট বিশাল জনগোষ্ঠীর সাপোর্ট অনৈসলামিক দলগুলোর বাক্সেই যায়। কারণ তারা ইসলামকে ব্যক্তিজীবনের জন্য চয়েস করলেও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ইসলামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে ব্যর্থ। এজন্য আমাদের ইসলামপন্থীরাই পরিপূর্ণ দায়ী। আর পীর মুরিদির বিষয়টি তো ভিন্ন। এই যে এককেন্দ্রিক দল, মাদরাসা কেন্দ্রিক দল, দরবার কেন্দ্রিক দল, তাতে জনগণের ওপর প্রভাব কী

মাদরাসা সংশ্লিষ্ট মানুষের সংখ্যা কত শতাংশ

মাত্র ১০শতাংশ বা তার কম হবে। বাকি ৯০শতাংশ কিংবা তারও বেশি জনগণের কথা চিন্তা করা কি ইসলামি রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব নয়

পীর- মুরিদি বা দরবার সংশ্লিষ্ট মানুষের সংখ্যা হয়তো ৫০-৬০শতাংশ হবে, কিন্তু ভোটের রাজনীতিতে দরবারী দলগুলোর এতো দুরাবস্থা কেন

কারণ জনগণ ধর্মীয় কারণে তাদের কাছে আসে, কিন্তু জনগণের প্রয়োজনে এই পীরেরা কখনোই তাদের কাছে যায় না।জনসাধারণের সুখ দুঃখ, হাসি-কান্নার সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করতে না পারলেই কেবল কিছু আশা করা যেতে পারে। তবে সময়ের প্রয়োজনে বাস্তবতার ভিত্তিতে এই নীতির কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, নিশ্চয়ই এটা ভালো দিক। বাংলাদেশে যতগুলো ইসলামী দল আছে, তাদের সবার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্ষমতায় গিয়ে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু একটি রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেই উপকরণগুলো প্রয়োজন, যেই সাপোর্ট বা লোক বলের প্রয়োজন, যত ম্যাকানিজমের প্রয়োজন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেই থিংক ট্যাঙ্ক ক্যাটাগরি গড়ে তোলা প্রয়োজন তার কোনটাই বাংলাদেশের কোন ইসলামপন্থী দলের কাছে পরিপূর্ণভাবে নাই। শুধু এক্ষেত্রে জামায়াতকে এগিয়ে রেখে হিসেব করলেও খুব সম্ভবত একশ তো আশি মার্ক দেওয়া যেতে পারে। জামায়াতকেও পরিপূর্ণ একশ মার্ক দিলে বাড়াবাড়ি হবে। এটাই বাস্তবতা! আবেগে চিৎকার দিয়ে লাফালে হবে না। এজন্য বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামী দলগুলো যদি কাছাকাছি এসে একটা ঐক্য গড়তে পারে, তাহলে হয়তো একটা উল্লেখযোগ্য যোগসূত্র একত্রিত করতে পারলেই কেবল পরিবর্তনের আশা করা যেতে পারে। জামায়াতের আশি মার্কের সাথে অন্যান্য ইসলামপন্থী দলগুলোর বিশ মার্ক যদি যোগ করা যায় তাহলেই কেবল একশ মার্ক হিসেব করা যাবে। এখন ঐক্যের কথা ওঠলেই নেতৃত্বের কথা সামনে চলে আসে। কেউ কারো নেতৃত্ব মানতে রাজি নয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রধান্য দিতে হবে ওই দলটাকে, যারা ইসলামী রাজনীতির জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশে। যেসময় অন্যান্য ঘরানার ইসলামপন্থীরা রাজনীতি করা হারাম বলে ফতোয়া দিত, সেসময় যারা ইসলামী রাজনীতিকে জনগণের কাছে তুলে ধরে এই মাঠ তৈরি করেছেন, যারা অতীতে সামান্য সুযোগ পেয়ে সেটাকে কাজে লাগিয়ে ইসলামী নেতৃত্বের নিস্কলুষতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে কেবল তারা-ই নেতৃত্বের আসনে সামনের কাতারে আসার উপযোগী। কেবলমাত্র লেবাস পোশাক আর বাহ্যিক আবরণ কখনোই রাজনীতির মাঠে নেতৃত্বের জন্য বিবেচিত হতে পারে না। হাফেজ্জী হুজুরের তওবার রাজনীতি শুরুর আগে বাংলাদেশের কওমি মাদরাসার আলেমরা ইসলামী রাজনীতি কি সেটা বুঝতেও শিখেন নি। আর সুন্নীরা তো আরো অনেক পরের কথা। যদিও এখন সবাই যারযার মত করে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু এসব দলগুলোর মধ্যে এমন দলও আছে যেই দলের প্রধানকে একটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিলে একদিনও পালন করতে পারবেন না যথাযথ অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতা নির্ভর দক্ষতার অভাবের কারণে। এমন পীরও বাংলাদেশে আছে যাদেরকে একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিলে যোগ্যতার অভাবে একঘন্টাও সামাল দিতে পারবেন কি না সন্দেহ, কিন্তু তাদের মুরিদের সংখ্যা হাজার হাজার। তার মুরিদরা জানে তিনি পীর মুরিদির কাজে দরবার আর খানকার লাইনে পারফেক্ট, কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে বা রাষ্ট্রীয় কাজের বেলায় তিনি অনুপযুক্ত। এজন্য ওই হাজার লাখো মুরিদরা তাকে পীর হিসেবে গ্রহণ করে লক্ষ কোটি টাকা হাদিয়া দিতে রাজি থাকে, কিন্তু ভোট দেয় বস্তুবাদী দলগুলোকে। নিছক দাড়ি টুপি, পাঞ্জাবি- জুব্বা, আর তাসবিহ ওয়ালা নেতা কর্মী নিয়ে দেশে ইসলামী বিপ্লব করার স্বপ্ন অলীক কল্পনাই থেকে যাবে। এজন্য দরকার বিশাল একটি চৌকস যোগ্য দক্ষ সৎ খোদাভীরু রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথাযোগ্য জনগোষ্টী তৈরী করা৷ এক্ষেত্রে কেবলমাত্র জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্যান্য ইসলামী দলগুলো অনেক পিছিয়ে। জামায়াত গ্রামের পোস্ট অফিস থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রণালয়, সামাজিক মাতবর থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার জন্য থিংক ট্যাঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রামের মসজিদ মক্তব থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটি, মহল্লার সভাসমিতি থেকে শুরু করে আর্থিকখাতের সফল ব্যাংক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে আর কেউ এগিয়ে যেতে পারে নি। ঐক্য করতে গিয়ে অনুপযুক্ত জায়গায় যদি নেতৃত্ব চলে যায়, সেটা কাটিয়ে ওঠে আবারও অনুকূল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আরো কয়েক প্রজন্মের জীবন চলে যাবে। বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে ম্যাজিক্যাল লিডারশীপকে সামনে আনতে হবে। তবে কল্পনা এবং বাস্তবতা অনেক ভিন্ন। এজন্য সবকিছুকে বাস্তবতার নিরিখে সময় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের সাথে মিলিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন। আগের সেই কাল্পনিক একচ্ছত্রভাবে আকিদার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাদ দিয়ে এখন চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার সময় এসেছে, সময় এসেছে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য মানানসই বাস্তবসম্মত রাজনীতি করার। এখনো যদি কওমি আর সুন্নীরা আকিদার দোকানদারিতে ব্যস্ত থাকেন, তাদের একেকটি দল সময়ের বিবর্তনে একেকটি সমিতি কিংবা পারিবারিক ক্লাবে পরিণত হবে। তাদেরকে এখন চিন্তা করা প্রয়োজন, কোন কারণে এতোটা বছর নিজেদের আকিদার বাইরে নিজেদের কর্মতৎপরতা বাড়ানো যায় নি। যেই দলটার বিরুদ্ধে কওমি আর সুন্নীরা একাট্টা হয়ে ফতোয়াবাজি করে এসেছে আজকে সেই জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান কোন জায়গায় আর ফতোয়াবাজদের অবস্থান কোথায়? তবে ঐক্যের ক্ষেত্রে শুধু ইসলামপন্থী হলেই সাথে নেওয়া যাবে না, বিগত ষোল বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের সময়ের অগ্নি পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদেরকে নিয়েই কেবল বৃহত্তর ঐক্য হতে পারে। আর যারা খুনি হাসিনার পা চেটে নিজেদের আম-ছালা রক্ষা করে চলেছিল, তাদেরকে ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যেমন হেফাজতের মাওলানা শফির পুত্র আনাস মাদানি, শাহবাগি নাস্তিক মৌলভী ফরিদ উদ্দিন মাসুদ আর দালাল মৌলভী মুফতি ফয়জুল্লাহর গ্রুপের সাথে কখনোই ফ্যাসিস্ট বিরোধী ইসলামপন্থীদের ঐক্য হতে পারে না। আওয়ামী লীগের অবৈধ এমপি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির তরিকত ফেডারেশন বা আটরশির জাকের পার্টির মত লীগের পা চেটে সুবিধা নেওয়া দলের সাথে কোন ঐক্য হতে পারে না। আর এদেরকে নিয়ে ঐক্য করা বা না করার মধ্যে মাঠপর্যায়ের ভোটের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। যদি এসব বাচবিচার না করে শুধু ঐক্য করার নামে জগাখিচুরি মিশিয়ে ফেললে বেশিদিন টেকসই হবে না, বরং পরবর্তীতে তা হিতে বিপরীত হয়ে দাড়াবে। আর যদি একটা যথাযথ বাস্তবসম্মত ইসলামী ঐক্য গড়ে তোলা যায় তাহলে একটা অভূতপূর্ব জাগরণের মাধ্যমে ব্যালটবিপ্লবের ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply