1. admin@currentnews-24.com : currentnews :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
অধ্যক্ষ রহমত উল্লাহ সিকদারের বড় ভাই জলিল সিকদারের মৃত্যুতে পালং ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের শোক প্রকাশ  উখিয়ায় ৪ দফা দাবীতে মানব বন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে  বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি “ফ্রেন্ডশিপ স্পোর্টিং ক্লাব” কর্তৃক কৃতি ক্রীড়াব্যক্তিত্বদের সংবর্ধনা প্রদান উখিয়ায় ইয়াবাসহ স্কুল শিক্ষক গ্রেফতার – পরিবারের দাবী ‘ষ’ড়’যন্ত্র উখিয়ায় বলির ছলে জুয়ার আয়োজনের চেষ্টা, আতঙ্কে স্থানীয়রা মরহুম নুরুল আবছারের স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত   ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ছিলেন সাহিত্য—সাংস্কৃতিক অঙ্গনের দিকপাল উখিয়া ও রামু প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযানে দু’উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অনধিক ১০টি করাতকল উচ্ছেদ ও উদ্ধার  আকাশমনি গাছের চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা তাঁর চট্টগ্রাম সফরকালে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন। 

মাজার নিয়ে বিতর্ক, বাস্তবতা ও আমার পর্যালোচনা- এম রহিম উল্লাহ

  • প্রকাশিত : বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫
  • ১১৬ বার পাঠ করা হয়েছে

মাজার নিয়ে বিতর্ক, বাস্তবতা ও আমার পর্যালোচনা

আমার দৃষ্টিতে দেশে ৫ ধরণের মাজার আছে,

১. হক্কানী অলিদের মাজার
২. রাজনৈতিক নেতাদের মাজার
৩. কাল্পনিক/স্বপ্নে প্রাপ্ত মাজার (যেখানে কারো কোন কবরই নেই)
৪. বিশেষ উদ্দেশ্যে নির্মিত মাজার। মৃত ব্যক্তি কোন অলি বূগূর্গ কিছুই ছিলেন না। কিংবা জীবদ্দশায় ধর্মীয় অনুশাসনও সেভাবে পালন করতেন না, কিন্তু তার সন্তান/আত্বীয়/ভক্তরা সমাজে বিশেষ মর্যাদা লাভের আশায়, নিজেকে মাজারের খাদেম পরিচয়ে ভক্ত অনুরক্ত বাড়ানো সহ নিজের সকল অনৈতিক কাজকে জায়েজ বানানোর বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরিকৃত মাজার।
৫. পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি এমন ব্যক্তির মাজার। এই মাজার আবার তিন ধরনের:

এক. যুগ যুগ ধরে মানুষ সেখানে কবর দেখে আসতেছে, এলাকাবাসী এর ব্যখ্যা জানার জন্য কোন আলেম বা পীরের কাছে গেলে তিনি সেই কবর দেখে হয়ত স্বীকৃতি দিয়েছে যে এটা কোন অলির কবর হতে পারে, তিনি উনার পক্ষ থেকে একটা নামকরনও করে দিয়েছেন (এটি উনার কাশফের মাধ্যমে প্রাপ্তও হয়ে থাকতে পারে) এরপর থেকে সেই নামেই সেই মাজার প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।

দুই. মজ্জুব ব্যক্তির মাজার। (মজ্জুব ব্যক্তির কথা হাদিসে আছে, সত্যিকারের মজ্জুব অলি যেমন আছে ঠিক তেমনি মজ্জুবের বেশধারী ভন্ডও আছে) উনার পরিচয় অজানা, ছেলে মেয়ে বা বংশধর নেই, উনার ইন্তেকালের পর ভক্তরা মাজার বানিয়েছে।

তিন. ধর্ম পরিচয়হীন ব্যক্তির মাজার। যাদের জীবদ্দশায় উনি কোন ধর্মের ছিলেন এটা কেউ জানতে পারেনি, উনি নিজেও সেটি ক্লিয়ার করে যাননি। কেউ বলে উনি মানবধর্মে বিশ্বাসী, কেউ বলে মুসলিম, কেউ বলে হিন্দু।এবার আসি আমরা মাজার বলতে কি বুঝি? কোন মুসলমান মারা গেলে তাকে শরীয়ত সম্মতভাবে মাটির নিচে দাফন করা হলে সেটিকে বলা হয় কবর। যখন সেই কবরটি কোন প্রসিদ্ধ অলি-বূজুর্গের হয়ে থাকে তখন সম্মানার্থে আমরা সেটিকে বলি মাজার। মাজার শব্দের অর্থ যিয়ারতের স্থান। যেহেতু অলিদের মাজার অন্যান্য কবরের তুলনায় অত্যাধিক যিয়ারত হয় সে দৃষ্টিকোন থেকেও সেটিকে মাজার বলা হয়। কোন হক্কানি অলির মাজার সেটি কাচা হোক কিংবা পাকা হোক সেটিকেই মাজার বুঝানো হয়। মাজার যিয়ারত সর্বসম্মতিক্রমে সুন্নাত। এখানে মাজার বলতে শুধুমাত্র হক্কানী অলিদের মাজার উদ্দেশ্য। কিন্তু এর বাহিরে অন্য যতসব নামধারী মাজার আছে তাদের কোন কর্মকান্ড আমরা সমর্থন করি না। এমনকি কোন হক্কানী অলির মাজারেও যদি শরীয়ত বিবর্জিত কোন কাজ হয় সেটিও গ্রহনযোগ্য হবে না। যারা মাজার বিরোধী তারা সব মাজারকেই এক চোখে দেখে, তাদের ভাষায় মাজারে যারা যিয়ারত করতে যায় তারা সবাই মাজারপূজারী। অপরদিকে হক্বানী অলিদের মাজার ব্যতিত বাকী যতসব মাজার নির্মানকারী গোষ্ঠী বা ব্যক্তি আছে, তারাও নিজেদের বানানো মাজারকে হক্কানী অলিদের মাজারের মতই সত্যিকার মাজার দাবী করে থাকে। সে জন্য আমি সকলের প্রতি অনুরোধ করে বলব- মাজার বললেই যেমন ঢালাওভাবে ভন্ড বলা যাবে না, ঠিক তেমনি মাজার বললেই চোখ বন্ধ করে হক্বের সার্টিফিকেটও দেওয়া যাবে না। ইনসাফের ভিত্তীতে সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে কোন লজ্জা নেই। হালালকে হালাল বলা, হারামকে হারাম বলা, ন্যায়কে ন্যায় বলা অন্যায়কে অন্যায় বলা একজন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। যে জেনে শুনে অন্যায়কে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে সে আর অন্যায়কারীর মধ্যে কোন প্রার্থক্য নেই। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদের কিছু পর্যায় আছে, যেমন ব্যংকে সুদের লেনদেন হয়,কিছু আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কাজ হয়, অনেক ক্লাবে মদ পান করা হয় সেজন্য যেমন ব্যাংক হোটেল কিংবা ক্লাব আমি ভাংগতে পারবো না ঠিক তেমনি মাজারের অনৈসলামিক কাজ হলেও সেটি আইন ও বিচার ব্যবস্থার মাধ্যম ব্যবস্থাগ্রহন না করে আইন আমি নিজের হাতে তুলে নিতে পারবো না।

তবে এটাও মনে রাখতে হবে ব্যাংক, হোটেল, ক্লাব এগুলো ধর্মীয় স্থাপনা নয়। সেহেতু সে সকল স্থানে মানুষ হারামকে হারাম জেনেই করে। কিন্তু মাজার যেহেতু ধর্মীয় বিষয়, সেজন্য সেখানে ধর্মের নামে অধর্মের কাজ হলে সেটি বন্ধে আলেম সমাজেরও বিশেষ ভূমিকা প্রত্যেকে আশা করে। তাই আইন যেমন নিজে হাতে তুলে না নিতে আলেমগন জনগনকে সচেতন করা উচিত ঠিক তেমনি ইসলামের নামে সকল প্রকার অনৈসলামিক কার্যকলাপ থেকে সকলকে বিরত থেকে সুন্নাত পদ্ধতিতে মাজার যিয়ারত ও সত্যিকার অলি বুজূর্গদের সম্মান করার বিষয়েও মানুষকে সচেতন করা উচিত। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে তাদের ইচ্ছামাফিক গন্ডগোল বাঁধানোর জন্য এই অস্থির সময়টাকে বেচে নিয়েছে। বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার গোটা দুনিয়াকে বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদের মিথ্যা বানোয়াট বয়ানকে ফেরি করে তার ফ্যাসিবাদের ভীত শক্ত করেছিল। কিন্তু চব্বিশের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের সেই বানোয়াট বয়ান জয় বাংলা হয়ে গেছে। এজন্য আমরা যদি এখন নিজেকে খুবই কড়া ধার্মিক হিসেবে জাহির করতে গিয়ে এমন কিছু করে বসি, যা পতিত সরকারের মিথ্যা বয়ানকে সত্যে পরিণত করবে, তা মোটেও কাম্য নয়। বাংলাদেশে এখনো ইসলামিক স্ট্যাট কায়েম হয় নি, আর প্রতিষ্ঠিত যেই রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে তারাও প্রায় সকলেই সেকুলার। মাজারের মত কিছু জায়গার প্রতি তাদের অন্তরে স্বাভাবিকভাবেই একটু আবেগ কাজ করে। সামনের নির্বাচন বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের জন্য অন্যদের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের হবে। এই নির্বাচনে ইসলামপন্থীদেরকে অনেক কলাকৌশল আর লিয়াজো মেন্টেইন করে কাজ করতে হবে। এজন্য সাধারণ মানুষ ধর্মের সাথে যেসব বিষয়কে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করে, সেসব বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এখন কাজ করতে হবে। আমার জানামতে – বিগত সরকার পতনের পরে যেসব মাজারে আক্রমণ করা হয়েছে, একজন প্রকৃত আল্লাহর ওলীর মাজারেও আক্রমণ হয় নি। যেমন দেওয়ানবাগী পীর নামের ভন্ড কাফেরের আস্তানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, যদি দেশে ইসলামী শাসন চালু থাকত, তাহলে সেটা সরকারই উচ্ছেদ করত। যদিও এই কাজটা কোন সিভিলিয়ানের দ্বারা মানানসই হয় নি। এই কাজগুলো কিছু উগ্র মানসিকতার মানুষের দ্বারা হচ্ছে, তাদের পরাজিত ফ্যাসিবাদের দোসর ও গুন্ডাপান্ডারা অংশ নিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে মিডিয়াতে প্রচার করে তাদের সেই পুরোনো ন্যারেটিভকে দেশে এবং বিদেশে ফেরি করার চেষ্টায় লিপ্ত হচ্ছে। কোন ইসলামী রাজনৈতিক দল ও বিজ্ঞ ইসলামিক স্কলার আলেমকে এসব কুকর্মের পক্ষে কথা বলতে আমি শুনি নি। সুতরাং আমাদের এই অস্থির সময়ে এসে কেউ যাতে ঘরের আগুনে আলু পুড়িয়ে খেতে না পারে সেদিকে নজর দেওয়ার দরকার আছে। এখন সর্বোচ্চ সংযম এবং ধৈর্যের সাথে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভন্ড এবং ভন্ডামি আর শিরিক বিদআতের বিরুদ্ধে কোরআন সুন্নাহর আলোকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন, সেই সাথে যেসব জায়গায় মাজারের নাম দিয়ে এসব অপকর্ম চলছে সেখানে সামাজিকভাবে বয়কট ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এসবকে প্রতিরোধ করতে হবে। সরকারকে এসব বিষয়ে বিজ্ঞ ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেমরা সঠিক তথ্য দিয়ে সরকারের মাধ্যমেই এসব বন্ধ করার প্রয়াস চালাতে হবে। প্রতিটি ঘরানার আলেমদের মধ্যে এই বিষয়ে প্রয়োজনে বারবার একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আসুন দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, নিজ ধর্মের মধ্যে ভিন্নমত লালনকারীদের সাথে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি, প্রশাসনিক আইনশৃঙ্খলা ও নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি, সবার মতামতকে সম্মান করতে শিখি। আগামীতে সবার বসবাসযোগ্য একটু সুখী সমৃদ্ধশালী ইনসাফভিত্তিক গণমুখী ইসলামী কল্যান রাষ্ট্র গড়ে তুলতে সবাই মেধা শ্রম বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি স্বাধীন সোনার বাংলাদেশকে নতুন রুপে গড়ে তুলতে কাজ করি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আ-মীন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি